আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): এই কারাগারের সব কক্ষ মাটির নিচে হওয়ায় বন্দিরা মাসের পর মাস কোনো প্রাকৃতিক আলো দেখতে পাওয়া যায় না। বন্দিরা পর্যাপ্ত খাবার পায় না এবং তাদের পরিবার বা বাইরের জগতের কোনো খবর জানার সুযোগ নেই। এছাড়া, তারা নিয়মিত মানবতাবিরোধী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
রাকেফেতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত দুজন বেসামরিক নাগরিক। একজন ৩৪ বছর বয়সী নার্স, যাকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় আটক করা হয়। অন্যজন ১৮ বছর বয়সী খাবার বিক্রেতা, যাকে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইসরায়েলি চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়।
পিসিএটিআই জানিয়েছে, রাকেফেতের জানালাবিহীন কক্ষে তিন থেকে চারজনকে গাদাগাদি করে রাখা হয়, যেখানে বাতাস চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই। বন্দিরা নিয়মিত মারধর, কুকুর দিয়ে আক্রমণ এবং খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে ভুগছেন।
সম্প্রতি ইসরায়েলের উচ্চ আদালত স্বীকার করেছে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে না। বন্দিদের কখনো কখনো দুই দিন পর মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য বাইরে বের করা হয়।
পিসিএটিআই-এর নির্বাহী পরিচালক তাল স্টেইনার বলেছেন, “কাউকে মাসের পর মাস ভূগর্ভে আটকে রাখা ইচ্ছাকৃত নিপীড়ন। দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকার কারণে বন্দিদের মানসিক ভারসাম্য, ঘুমের ছন্দ নষ্ট হয় এবং শরীর ভিটামিন ‘ডি’ উৎপাদন করতে পারে না। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়াও কষ্টসাধ্য হয়।”
রাকেফেত কারাগারটি আশির দশকের শুরুতে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক অপরাধীদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে কয়েক বছর পর ‘অমানবিক’ বলে এটি বন্ধ করা হয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভি কারাগারটি পুনরায় চালুর নির্দেশ দেন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে কারাগার বন্ধ হওয়ার সময় মাত্র ১৫ জন বন্দী ছিল। এখন সেখানে প্রায় ১০০ জনকে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, কারাগারটি হামাস ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের রাখার জন্য পুনরায় খোলা হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর প্রথমদিকে ইসরায়েল গাজা থেকে ১ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করে।
Your Comment